Tuesday, 9 April 2013

EKTI BOT GAACH..


একটি বটগাছ
সুদেষ্ণা গুপ্ত
চোখের সামনে নেমেছে অন্ধকার।
চুপিসারে মৃত্যু দেয় হাতছানি।
জানি তা জানি।
ভালবাসি দিগন্তের খোলা আকাশ,
মাটির গন্ধ আর ঝড়ো বাতাস।
কল্পনায় ভেসে বেড়াতে টানে মন,
খুঁজি যে প্রিয়জন।
বাস্তবের মুখমুখি হতে করে ভয়।
স্মৃতিগুলো যে বড়ো স্বপ্নময়।
চলতে পারিনে আর তোমার আঘাত বয়ে নিয়ে।
দু’চোখে জলের বন্যা যে যায় বয়ে।
যেমনি করে বান আসে বর্ষায় নদীতে,
দ্রুত বিপদসীমার ঊর্ধ্বে সেই বান যায় বয়ে।
মোর কল্পনার পালতোলা নৌকাটি
যায় ছিহ্ন ভিহ্ন হয়ে।
প্রকৃতি আমি, মোরে দাও থাকতে নিজেরই মতো।
ধ্বংস করে করোনা আশাহত।
আমিতো সতেজ করে রাখি সবে,
যারা মোর পাশে রবে।
মোরে দিওনা শেষ করে, দাও মোরে থাকতে বেঁচে।
আরতো চাইনি কিছু তোমার কাছে।
জীবন যন্ত্রণার চুপিচুপি কান্না
বয়ে নিয়ে চলেছি এই বুকে।
নির-বিহারী সাথিহারা হয়ে মন যে মোর দুখে।
এই পৃথিবী মোর প্রথম প্রেম। এটাই শেষ।
তুমি তা জানো, মানো বা না মানো।
মোর প্রেম স্পর্শ পেয়ে,
আলোয় আলোয় গেছে ভুবন ভুবনে ছেয়ে।
মোর প্রেমের সাথে সব ফুল ফোটে।
রাঙা হয় অকপটে।
কে জানে কেন বোঝনা মোর না বলা কথা।
অস্তিত্ব মোর কেন করো নিশ্চিহ্ন?
এটাই যে মনের ব্যাথা।
দীর্ঘকাল কালের পর কাল আমি আছি,
ফেলে সব নিজ কাজ।
আমি যে বটগাছ।

Sunday, 7 April 2013

KOPOT - KOPOTI...KOTHA....


কপোত কপোতী কথা
সুদেষ্ণা গুপ্ত

কপোতীঃ সূর্যের আলোকে চাঁদ নাকি আলোকিত। সন্ধিক্ষণ আসে চলার পথে। তারপরও চন্দ্র-সূর্য চলে নিজ নিজ কক্ষপথে।
কপোতঃ চলে চাঁদ সারারাত। ধরা দেয় ধরনির কোনে। চাঁদ গেলে চলে তখনি সূর্য দেখা দেয় পৃথিবীর পরে। সঙ্গি হতে নাহি পারে।
কপোতীঃ “যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙবে ঝড়ে”...। প্রতীক্ষা থাকবে, ওই ঝড়ের। সবাই হয়তো আমরা প্রতীক্ষা করে থাকি। এর নামই জীবন। জানে তা মন।
কপোতঃ কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন কাটানো রাত। বাড়াও দু হাত। তথাপি বলি না থাকলে প্রতীক্ষা, জীবনের মানে বৃথা।
কপোতীঃ চূড়াটি তোমার যে রঙে রাঙিয়েছ তুমি সে রঙে রাঙিয়ো আমার আঁচল খানি। তোমারি মস্তক সদা থাকিবে উজ্জ্বল। আমি করিব মাথা নত, আমার প্রেমের এই যে আকুতি। বন্ধু মানো এ রীতি।
কপোতঃ তোমার আঁচলে আছে আমার হৃদয় জুড়ে ভালবাসা। হয়তো তা লাল বা সাদা। তোমারই রামধনুতে সে যে গেছে হারিয়ে। সব ছাড়িয়ে।
কপোতীঃ রামধনুর সাত রঙে রাঙিয়ে দিয়েছ আমায়। লাল রঙে রাঙিয়ে দিলে মোর হৃদয়খানি। লাল আবিরে হলাম রঙিন, হৃদয়ের টানে রাণী।
কপোতঃ রাঙাচ্ছি তোমার হৃদয় যে রঙ দিয়ে, সে রঙ প্রেমের শুধু। চারিদিক করে ধূধূ। মন খোঁজে তোমায় শুধু। তাইতো মন করে, তোমায় করি আমার প্রেমে বিলীন, অন্তহীন।
কপোতীঃ সব কিছু জড়ো করে যে, সে আমায় নাহি পায়। তোমার মাঝে সত্য আছে, তাই আমি সেথায়। করবো স্নান শ্রাবনের বৃষ্টি ধারায়। মিলাব প্রেম আমার তোমার সাগরের মিলন ধারায়।
কপোতঃ রেখেছি তোমায় আগলে আমার বুকের মাঝে। সকাল সাঁঝে। সবার থেকে করতে আড়াল। অনন্তকাল। পাছে যাও হারিয়ে, সব ছাড়িয়ে।
কপোতীঃ তোমায় করিতে বিজয়ী আমি হারিয়েছি মোর হৃদয়। আমি হয়েছি যে ঋণী তব হৃদয়ের কাছে। তোমায় ছেড়ে মোর মন কেমনে বাঁচে?
কপোতঃ সাগরের উত্তাল ঢেউকে পরাস্ত করে দিলে দুদণ্ড শান্তি। তাইত সে তোমার শ্রাবণের ধারায় প্রানবন্ত হয়ে উঠেছে। মনে ফুল ফুটেছে।
কপোতীঃ তোমার মেঘলা আকাশের মেঘ হবো। ঝোরে যাব বৃষ্টি হয়ে। আবার আকাশের মেঘ হয়ে উড়ে যাব, তোমায় দুদণ্ডের শান্তি দিয়ে।
কপোতঃ মেঘ হয়ে উড়ে গেলে থামাব। বাতাস থেকে টেনে নেব নিজের নিঃশ্বাস। বৃষ্টি হলে তোমারই কাছে নদী হয়ে যাব বয়ে।
কপোতীঃ আমি সুন্দরের আর তুমি হলে প্রেমের পূজারি। তুমি আমি মিলে প্রেম পূজারি। করবো পূজা নিঃশব্দে, এসো দুয়ারে। আমি জ্বালিয়ে রাখব
আমার প্রদিপখানি তোমার তরে।
কপোতঃ তোমার প্রদিপে থাকবো শিখা হয়ে। করবো তোমার হৃদয় আলো। লাজে রাঙা হবে তব মুখখানি, আমি জানি। দেখব আমি প্রদিপের এই আলোয়। তোমার ওই পূজার অপেক্ষায় রইলাম। না হয় আজ সব দুখ সইলাম।
কপোতীঃ তাহলে চলো যাই চাঁদের দেশে, ফুলের শয্যা পাতিব সেথায়। করিব খেলা নিয়ে যাব সেই ছোট্ট বেলায়।
কপোতঃ আমি হবো অষ্টাদশী, তুমি হবে মোর ষোড়শী। বনান্তর হতে আনবো ফুল তোমার অঞ্জলি তরে। ভালবাসা হয়ে নেব উপহার আমার তরে।